অনলাইনে পণ্য কিনতে গিয়ে দুর্ভোগের শিকার !

 গত ১৬ জুলাই মধ্যরাতে আমার খুব কাছের এক বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিল। আমার বন্ধুর নাম নবিন । বন্ধু বললো, তার পাঁচ লাখ টাকার পণ্য ই-কমার্স সাইটে আটকে আছে। এছাড়া আমার আরো কয়েকজন বন্ধুর লাখ লাখ টাকা ইভ্যালিতে আটকে আছে বলেও জানি। আমি ব্যক্তিগতভাবে বাংলাদেশের ই-কমার্স ধরণ পছন্দ করতাম না শুরু থেকেই। আজ পর্যন্ত কোনো ই-কমার্স সাইটে কোনো প্রোডাক্ট অর্ডার করিনি।


বাংলাদেশের অনেক তরুণ, অনেক উদ্যোক্তা, অনেক ব্যবসায়ী বিভিন্ন ই-কমার্স সাইট থেকে পণ্য কিনে বিক্রি করতো অধিক মুনাফার আশায়। বর্তমানে বাংলাদেশের অনেক তরুণের, অনেক ব্যবসায়ী টাকা বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটে আটকে আছে। তারা নানা মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। এমনকি তারা তাদের টাকা অথবা অর্ডার করা পণ্য পাবে কি না তা নিয়েও হতাশায় ভুগছেন।


সরকার বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের প্রধানদের বিদেশ যাওয়াতে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। এমনকি তাদের ব্যাংক হিসাবও সিল করেছে। কিন্তু এরপরও দেখা যাচ্ছে ই-কমার্স সাইটগুলো অনলাইনে তাদের পণ্য বিক্রি চালু রেখেছে।


আমি ব্যক্তিগতভাবে চাই ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশে আসুক এবং সুন্দর ভাবে ব্যবসা করুক। কিন্তু ই-কমার্স ব্যবসা প্রতিষ্ঠানগুলো খুবই ভুল পথে অগ্রসর হচ্ছে বলেই মনে হচ্ছে। তারা অতীতের অর্ডার করা পণ্য সবাইকে ডেলিভারি না করে নতুন পণ্য বিক্রি করছে।


এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলোর আগে অর্ডার করা সব পণ্যের ডেলিভারি নিশ্চিত করা উচিৎ দ্রুত। এজন্য  নতুন পণ্য বিক্রি চালু না রাখাই শ্রেয়।


‘ইভ্যালি’র চেয়ারম্যান-এমডির ব্যাংক হিসাব জব্দ

 


অনেকে সরকার তথা ই-কমার্স নীতিনির্ধারকদের দোষারোপ করছেন। আমি মনে করি সরকার অথবা ই-কমার্স নীতিনির্ধারক যারা বর্তমানে বিভিন্ন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান মালিকদের ব্যাংক হিসাব জব্দ থেকে শুরু করে বিদেশে নিয়ে নিষেধাজ্ঞা করেছেন, তারা একেবারেই সঠিক পথে রয়েছেন। আমরা কেউই চাই না নতুন করে ডেসটিনির মতো ইতিহাসে প্রতারণার পাল্লা ভারি হোক।


পাশাপাশি যারা বিভিন্ন ই-কমার্স সাইটে  অফারের পণ্য কেনার জন্য অর্থ ব্যয় করেছেন তাদেরও বোঝা উচিত ১০ টাকার পণ্য কখনই পাঁচ টাকায় দেওয়া যায় না।  অনেকেই এসব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান থেকে পণ্য ক্রয় করে সেসব বিক্রি করে সহজ উপায়ে মুনাফা অর্জনের চেষ্টা করছিল। এদের সবারই বোঝা উচিৎ,  ব্যবসায় লাভ করার জন্য কোনো শর্টকাট নেই। ধীরে ধীরে ছোট ছোট মুনাফা অর্জনের মাধ্যমে বড় মুনাফায় করা সম্ভব। মানুষ ছোট ছোট মুনাফা অর্জনের মাধ্যমে একসময় সফল  ব্যবসায়ী হতে পারে।


প্রত্যাশা এটাই থাকবে ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো যেন কেনাকাটার সহজ লাভজনক প্রথা চালু করতে সক্ষম হয় এবং দেশের তরুণ সমাজ তথা বেকার যুবক-যুবতীদের কর্মসংস্থানের মাধ্যম হয়।

লেখক:ফাহিম জামান।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সিলেটি ভাষা ও সংস্কৃতি

নতুন সমাজ ব্যবস্থায় হাটছি আমরা

প্রসঙ্গ: ধর্মওয়ালা শাসক শোষক বনাম অভিজিৎ