লালন-দর্শন উপেক্ষা করে, লালন-চর্চা চরম হতাশাজনক ও চিন্তার দীনতা।

 বাংলা ভাষার কালজয়ী কিছু গান যা মন্ত্রমুগ্ধের ন্যায় মানুষকে মোহাচ্ছন্ন করে রাখে, লালন সাঁইর গান তাদের মধ্যে রয়েছে প্রথমসারিতে। সব শ্রেণী পেশার মানুষ, ও সব কালের মানুষের নিকট সমানভাবে গ্রহণযোগ্য লালনগীতি। আবার লালন গানের মর্মবাণী না বুঝে অনেকেই শুধু হৃদয়গ্রাহী সুরেই বিমোহিত হয়ে থাকে। নানান ব্যক্তি বা পক্ষ নিজেদের মতো করে ব্যাখ্যা করেছেন লালনের কথা, অথবা স্বয়ং লালনকেই অন্তর্ভুক্ত করতে চেয়েছেন তাদের দলে। ভালো মন্দ সব মিলিয়ে যেন এক অসুস্থ প্রতিযোগীতা শুরু হয়ে গেছে ইতিহাসের এই মহান বাক্তিকে নিয়ে; সাঁইজির ভাষায় বলতে হয় – “এসব দেখি কানার হাটবাজার”। আসলে অন্ধের মত পথভ্রষ্ট ও বিপথগামী না হয়ে, অন্যের মনগড়া কথায় কান না দিয়ে আমাদের উচিৎ নিজে থেকে তার গান নিয়ে চিন্তা করা।

ছবি: ইন্টারনেট


আমি যতবার তার গান শুনি তার হৃদয়ের হাহাকার আর ব্যাকুলতা গভীরভাবে স্পর্শ করে আমাকে। শৈল্পিক চিন্তা, দরদ মাখানো অনুভূতি, ছন্দের জালে স্বপ্ন বোনা, প্রাঞ্জল উপস্থাপনা, চরম সত্য আত্মউপলব্ধি, বিনয়ী, ও প্রতিবাদী এসবকিছু লালন-চরিত্রের অবিচ্ছেদ্য অংশ।


চিন্তার শিল্পী, কথার জাদুকর, সুরের কবি লালন তার গানে গানে সৃষ্টিকর্তাকে আপনকরে পেতে চেয়েছেন বারবার, করুনা প্রার্থনার মাঝে সঠিক পথের দিশা অনুসন্ধান করেছেন, সৃষ্টির মাধুর্য দিয়ে স্রষ্টার শ্রেষ্টত্ব শিকার করতে আবেগাপ্লুত হয়েছেন বারংবার। আবার সামাজিক অন্যায়, কুসংস্কার, মূল্যবোধ হীনতা, ধর্মের নামে অধর্ম, চিন্তার-ব্যাধি ইত্যাদি সমস্যা নিয়ে ব্যাথিত ছিল লালন হৃদয়।


লালন দর্শন অবজ্ঞা, বিকৃতি বা অপব্যাখ্যা করে লালন চর্চা গর্হিত অন্যায় ও লালন প্রেমীদের সাথে প্রতারণাও বটে।

লেখক :মেহসান।

 

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

সিলেটি ভাষা ও সংস্কৃতি

নতুন সমাজ ব্যবস্থায় হাটছি আমরা

প্রসঙ্গ: ধর্মওয়ালা শাসক শোষক বনাম অভিজিৎ